ghee

আজ আমার চেম্বারে আকস্মিক ভাবে উপহার হিসেবে পেলাম এক বোয়াম খাঁটি ঘি। প্রদান করলেন একজন সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী আখি চৌধুরী।

আঁখি ভীষন ভালবাসে তার ছোট ভাইকে, তাইতো ভাইয়ের দীর্ঘদিনের নাকের হাড়বাঁকা, মাংস বৃদ্ধি ও সাইনুসাইটিসের সমস্যা থেকে মুক্ত করনোর জন্য কিছু দিন আগে আমার চেম্বারে আসে।

আমি তার ছোট ভাই জিহাদ কে দেখে তার FESS with Endoscopic Septoplasty & Turbinoplasty অপারেশনটি সফলভাবে সম্পন্ন করি।

অপারেশনের পর জিহাদ এখন সম্পূর্ণ সুস্থ্য। এখন তারঃ

  • নাক বন্ধ থাকে না
  • শ্বাস কষ্ট হয়না
  • মাথা ব্যথা করে না

জিহাদের সুস্থ্যতায় খুশি তার পুরো পরিবার। তাইতো নানী, মা, ভাই সহ আজ আমার চেম্বারে আসে আঁখি। উপহার স্বরূপ আমার হাতে তুলে দিল এক বোয়াম খাঁটি ঘি।

ghee

একজন চিকিৎসক হিসেবে জানি ঘি আমাদের শরীরে কতটা প্রয়োজনীয়।

আসুন একটু জেনে নিই ঘি কেন খাবেন ?

ঘি পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাদ্য। এতে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি বাচ্চাদের জন্য ভীষণ উপকারী। ঘি’তে কার্বোহাইড্রেট নেই, আছে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাট যেমন:

  • বুটিরিক অ্যাসিড,
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড,
  • লিনোলেনিক অ্যাসিড,
  • অ্যারাকিডনিক অ্যাসিড

আরোও রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলসও। এই পুষ্টি উপাদানগুলো আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয়। •

ঘি’তে প্রয়োজনীয় ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিন ডি, কে, ই এবং এ রয়েছে। এই উপাদানগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দেহের বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে। ঘি শরীরকে অন্যান্য খাবার থেকে চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় খনিজ এবং ভিটামিন শোষণে সহায়তা করে এবং আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ghee
  • নিয়মিত ঘি খেলে ভিটামিন-মিনারেলসের ঘাটতি পূরণ হওয়ার পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণও বাড়ে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিক্যাল বা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এতে ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে।
  • ঘি খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে, কারণ এতে আছে বুটিরিক অ্যাসিড। এটি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। ফলে বদহজম, গ্যাস-অম্বল হওয়ার আশঙ্কা কমে।
  • ঘি খেলে দেহের তাপমাত্রা বাড়ে। এজন্য শীতকালে ঘি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  • ক্যালসিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের একটি উৎস ঘি। এই উপাদান হাড় ও জয়েন্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ ছাড়া ঘি খেলে যে হরমোন নিঃসরণ হয়, তা জয়েন্টের জন্য প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি আর্থ্রাইটিস ও হাড়ের যেকোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। যাদের জয়েন্টের সমস্যা আছে, তারা খাদ্য তালিকায় ঘি রাখতে পারেন।
  • ঘিতে থাকা ওমেগা-৬ ও ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নার্ভের কার্যক্ষমতা ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। এই পুষ্টি উপাদান ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমারের মতো মস্তিষ্কের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত ঘি খেলে শরীর ভেতর থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ত্বকের ভেতরে কোলাজেনের উৎপাদনও বেড়ে যায়। ফলের ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়ে। ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়ে আদ্রতা বজায় থাকে।
  • খালি পেটে ঘি খেলে শরীরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের মাত্রা বাড়তে থাকে, যা রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্টের কার্যকারিতা স্বাভাবিক থাকে। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
  • ঘি’তে ভিটামিন এ থাকে, যা চোখের জন্য ভালো। গ্লুকোমা রোগীদের জন্য উপকারী।
  • ঘি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ভাইরাস, কাশি প্রভৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে।

সতর্কতা:

  • সাচুরেটেড ফ্যাট বেশি—ঘি মোটা ভাবে স্যাচুরেটেড ফ্যাটে ভরা; অতিরিক্ত খেলে LDL (খারাপ কোলেস্টেরল) বাড়তে পারে ।
  • উচ্চ ক্যালোরি: ১ টেবিল চামচে প্রায় 130 ক্যালোরি; ওজন কমাতে হলে পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত করতে হবে ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আখি চৌধুরী, প্রয়োজনীয় একটি উপহার আমাকে প্রদান করার জন্য।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *